শুক্রবার, ২৬ আগস্ট, ২০২২

খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি? rieajul সকল বিষয়

খতিয়ান

 জমির ক্ষেত্রে খতিয়ান অর্থ হইল ‘হিসাব’। মূলত জমির মালিকানা স্বত্ব রক্ষা ও রাজস্ব আদায়ের জন্য জরিপ বিভাগ কর্তৃক প্রতিটি মৌজার জমির এক বা একাধিক মালিকের নাম, পিতা বা স্বামীর নাম, ঠিকানা, দাগ নম্বর, ভূমির পরিমাণ, হিস্যা(অংশ), খাজনা ইত্যাদি বিবরণসহ যে ভূমি স্বত্ব প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।

বাংলাদেশে সাধারণত ৪ ধরনের খতিয়ান রয়েছে। যথা- 

  • সি. এস খতিয়ান
  • এস. এ খতিয়ান
  • আর. এস খতিয়ান
  • বি. এস খতিয়ান / সিটি জরিপ

  • ১]সি. এস খতিয়ান

১৯৪০ সালে ব্রিটিশ সরকার জরিপ করে যে খতিয়ান তৈরি করে তাকে সি. এস খতিয়ান বলা হয়। আমাদের দেশে এটিই প্রাথমিক খতিয়ান হিসাবে বিবেচিত।

২]এস. এ খতিয়ান

পাকিস্তান আমলে ১৯৫০ সালে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের চতুর্থ অধ্যায় এর ১৭ হতে ৩১ দ্বারা মতে ১৯৫৬-৬০ সালের দিকে যে খতিয়ান তৈরি করা হয় তাকে এস. এ (State Acquision) খতিয়ান বলে।

৩]আর. এস. খতিয়ান

বাংলাদেশ সরকার পূর্বের তৈরিকৃত খতিয়ানের ভুল ত্রুটি সংশোধন করার জন্য নতুনভাবে উদ্যোগ নিয়ে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা আর. এস(Renisional Survey)খতিয়ান নামে পরিচিত।

৪] বি. এস খতিয়ান

১৯৯৮-৯৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত চলমান জরিপকে বি. এস খতিয়ান বা সিটি জরিপ বলে। এই খতিয়ান প্রস্তুতের কার্যক্রম এখনো চলছে।

খতিয়ানে যে বিষয় গুলো উল্লেখ থাকে

খতিয়ানে কি কি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে সে সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় অর্জন বিধিমালা ১৮ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে। এগুলো হলো-

১) প্রজা বা দখলদারের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা, তারা কোন শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত, তাদের অধিকৃত জমির অবস্থান শ্রেণী পরিমাণ ও সীমানা।

২)  প্রজার অথবা জমির মালিকের নাম, পিতার নাম ও ঠিকানা।

৩) খতিয়ান প্রস্তুতের সময় খাজনা এবং ২৮, ২৯, ৩০ বিধি অনুযায়ী নির্ধারিত খাজনা। যদি খাজনা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকে তাহলে যে সময় ও যে যে পদ্ধক্ষেপে বৃদ্ধি পায় তার বিবরণ। যে পদ্ধতিতে খাজনা ধার্য হয়েছে তার বিবরণ।

৪) গোচরণ ভূমি, বনভূমি ও মৎস্য খামারের জন্য ধারণকৃত অর্থ। কৃষি কাজের উদ্দেশ্যে প্রজা কর্তৃক পানির ব্যবহার এবং পানি সরবরাহের জন্য যন্ত্রপাতি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত প্রজা ও জমির মালিকের বর্ণনা।

৫) নিজস্ব জমি হলে তার বিবরণ।

৬) পথ চলার অধিকার ও জমির সংলগ্ন অন্যান্য ইজমেন্টের অধিকার।

৭) খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর, বাট্টা নম্বর, এরিয়া নম্বর, মৌজা নম্বর ও জে. এল নম্বর, জেলার নাম, উপজেলা/থানা/ইউনিয়ন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত থাকে।

খতিয়ান তৈরির ইতিহাস সেই ব্রিটিশ আমল থেকে। এরপর পাকিস্তান এবং বর্তমান বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরেও সংশোধনের মাধ্যমে অনেক ধাপে খতিয়ান তৈরির কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়

এখানে ক্লিক করে খতিয়ান যাচাই করুন 


মোট চার ভাবে আপনার জমির খতিয়ান যাচাই করতে পারবেন
★ খতিয়ান নম্বর জানা থাকলে খতিয়ান নাম্বার দিয়ে সার্চ করে,

★দাগ নম্বর জানা থাকলে দাগ নম্বর দিয়ে সার্চ করে,

★ জমির মালিকের নাম জানা থাকলে জমির মালিকের নাম দিয়ে সার্চ করে এবং

★ জমি মালিকের পিতা বা স্বামীর নাম জানা থাকলে জমি মালিকের পিতা/স্বামীর নাম দিয়ে সার্চ করে।


এই চার মাধ্যমের প্রত্যেকটির বাম পার্শ্বে একটি ছোট গোল ঘর বা বৃত্ত রয়েছে। উপরের চার পদ্ধতির যে পদ্ধতিতে আপনি সার্চ করতে চান, তা বাম পার্শ্বের গোল ঘরে মাউস দিয়ে ক্লিক করুন। এরপর উপরের চার পদ্ধতির মধ্যে আপনি যে পদ্ধতিতে ক্লিক করেছেন তার ঠিক নিচে একটি ছোট বক্সটি আসবে, বক্সটি পূরণ করুন। অর্থাৎ খতিয়ান নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে খতিয়ান নম্বরটি বক্সে লিখুন, দাগ নম্বর সিলেক্ট করে থাকলে দাগ নম্বরটি বক্সে লিখুন, মালিকের নাম সিলেক্ট করে থাকলে মালিকের নাম বক্সে লিখুন, মালিকের পিতা/স্বামীর নাম সিলেক্ট করে থাকলে পিতা/স্বামীর নাম বক্সে লিখুন।

এরপর নিচে দুটি সংখ্যা যোগ করতে বলা হবে। সংখ্যা দুটি যোগ করে যোগফল নিচের বক্সে লিখুন। সর্বশেষ ‘খুজুন’ অপশনে ক্লিক করুন।

এভাবে আপনি আপনার পছন্দের খতিয়ান দেখতে বা যাচাই করতে পারবেন।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন